লাহোরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ রানে হারিয়েছিলো পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে হারিয়ে সমতায় ফিরেছিল প্রোটিয়ারা। ফলে তৃতীয় এবং শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি পরিণত হয় অলিখিত ফাইনালে। সিরিজ নির্ধারণী সেই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ২-১ সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান। সেই সাথে প্রথম দল হিসেবে ১০০টি টি-টোয়েন্টি জয়ের অনন্য কীর্তি গড়লো তারা।
আট ওভারেই ৪৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস, শেষ পর্যন্ত ডেভিড মিলারের ঝড়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৬৪ রানে থামে। জবাবে খেলতে নেমে ৮ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। ফলে মিলারের অপরাজিত ৮৫* রান এবং শামসির ৪ উইকেট দুটোই বৃথা যায়।
১৬৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে স্বাগতিকদের দূর্দান্ত শুরু এন দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং হায়দার আলী। প্রথম পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫১ রান যোগ করে এই উদ্বোধনী জুটি। এরপর ১৫ রান করে তাবরিজ শামসির বলে বোল্ড হন হায়দার। একই বোলারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে দলীয় ৭২ রানে ফিরেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৩০ বলে ৫ চার আর ২ ছয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান।
এরপর হুসাইন তালাত দ্রুত ফিরলেও, আসিফ আলীকে নিয়ে এগুতে থাকেন বাবর আজম। ৫ চার আর ১ ছয়ে ৩০ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে প্রিটোরিয়াসের বলে বোল্ড আউট হন পাকিস্তান অধিনায়ক। এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তবে হাসান আলী এবং নওয়াজ আলীর অবিচ্ছেদ্য পার্টনারশিপে আর কোন বিপদ না বাড়িয়ে সহজ জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে এসে পাকিস্তানি বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারানো সফরকারীরা দ্বিতীয় উইকেট হারায় ২৪ রানে। প্রথমে রেজা হেনড্রিক্স এবং পরে স্মুটস, দুজনকেই ফেরান মোহাম্মদ নওয়াজ। এরপর জানেমান মালান এবং পিট ভন কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু ৪১ থেকে ৪৮ রানেই আরও ৪ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা।
১৬ রান করা পিটে ভনকে ফেরান হাসান আলী। আর নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে করা প্রথম ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক হেনরি ক্লাসেন এবং ওপেনার জানেমান মালানের উইকেট তুলে নেন অভিষিক্ত জাহিদ মাহমুদ। আর দুই রান পরেই অ্যান্ডিল ফেহলাকওয়াইওকে ফেরান আরেক লেগস্পিনার উসমান কাদির।
৮ ওভারেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ বিপাকে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ডেভিড মিলার এবং ডুয়াইন প্রিটোরিয়াস ১৭ রানের জুটি গড়েন। ১১তম ওভারে আবারও আঘাত হানেন অভিষিক্ত জাহিদ মাহমুদ। দলীয় ৬৫ রানে এই লেগ স্পিনারের তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরেন প্রিটোরিয়াস।

তবে অষ্টম উইকেটে ডেভিড মিলার এবং ফরটুইনের পার্টনারশিপে শতরানের গন্ডি পার করে প্রোটিয়ারা। এ জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৪১ রান যোগ করার পর ফরটুইন দলীয় ১০৬ রানে ব্যক্তিগত ১০ রানে আউট হন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই চালিয়ে যায় ডেভিড মিলার। ৩১ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূর্ণ করা মিলার, শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৮৫* রানে অপরাজিত থাকেন। ৭ ছয় আর ৫ চারে তার অনবদ্য ইনিংস সাজিয়েছিলেন এই বামহাতি হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ (টস- পাকিস্তান)
পাকিস্তানঃ ১৬৯/৬, ১৮.৪ ওভার; বাবর ৪৪, রিজওয়ান ৪২ ; শামসি ৪/২৫
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ১৬৪/৮, ২০ ওভার; মিলার ৮৫*, মালান ২৭; জাহিদ ৩/৪০
ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ মোহাম্মদ নওয়াজ।
ম্যান অব দ্য সিরিজঃ মোহাম্মদ রিজওয়ান।