নেইমারের পড়ে যাওয়ার দৃশ্যটা দেখলে ভয় লাগাটা অস্বাভাবিক কিছু না! বুধবার রাতে ফরাসি লীগ কাপে কানকে ন্যূনতম ব্যবধানে হারিয়ে আসরের শেষ ৩২-এ জায়গা করে নিয়েছে পিএসজি। ম্যাচের ৪৯তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড মইসে কিন। গোলের যোগান দেন ২৯ বছর বয়সী নেইমার। তবে ম্যাচ জিতলেও পিএসজির বড় ক্ষতি করেছেন কানের স্টিভ ইয়াগোর। গোল পাওয়ার মাত্র সাত মিনিট পরই ফাউলের শিকার হয়ে চোট পান নেইমার। স্টিভ ইয়াগোর কড়া ট্যাকলের পর ব্রাজিলিয়ান তারকাকে মাঠ ছাড়তে হয় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল রিপোর্ট শেষে জানা যায় অন্তত এক মাসের জন্য মাঠের বাহিরে থাকতে হবে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলারকে। দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফের ইঞ্জুরি কষ্ট দিচ্ছে নেইমারকেও। মনের কষ্ট আর চাপা রাখতে পারলেন না ব্রাজিলিয়ান তারকা। নিজের ইনস্ট্রাগ্রামে নেইমার লিখেছেন,
“দুঃখটা বিশাল, ব্যথা অপরিসীম আর কান্না অবিরাম। জীবনে যা করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি, সেই ফুটবল খেলা থেকে আবারও কিছুদিন দূরে থাকবো। কখনও কখনও আমি অস্বস্তি বোধ করি, এর কারণ আমার খেলার ধরন; কারণ আমি ড্রিবল করি আর তারা আমাকে ক্রমাগত আঘাত করে।”
ব্রাজিলিয়ান তারকা এখনও সমস্যাটা কোথায় বুঝতে পারছে না। কেন বারবার তার সঙ্গে এমন হচ্ছে এই উত্তর তার জানা নেই। তবে চারপাশের নিন্দুকদের তীব্র সমালোচনা প্রচন্ড আঘাত করে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের। তারকা এই ফুটবলার আরও লিখেছেন,
“বুঝতে পারি না, সমস্যাটা আমার নাকি আমি মাঠে যা করি সেটার। বিষয়টা আমাকে খুব কষ্ট দেয়। ‘অবশ্যই তাকে আঘাত করতে হবে’, ‘সে ইচ্ছা করে পড়ে যায়’, ‘কে কাঁদে’, ‘শিশুর মতো’, ‘বখে গেছে’-এমন সব কথাবার্তা যখন কোন খেলোয়াড়, কোচ, ধারাভাষ্যকার বা যে কারও থেকেই শুনি, খুব খারাপ লাগে।
সত্যিই বিষয়টা আমাকে কষ্ট দেয়। জানি না, কতদিন আমি এটা সইতে পারবো। আমি কেবল ফুটবল খেলেই খুশি থাকতে চাই। আর কিছু না।”

অবশ্য মৌসুমের এই পর্যায়ে নেইমারের চোট পাওয়া যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে! স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে পাড়ি জমানোর পর ২০১৮ সালের শুরুতে পায়ের হাড়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। সেবার তাকে ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬ থেকে ছিটকে পড়েছিল পিএসজি। তারা হেরেছিল স্পেনের সফলতম ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের কাছে।
২০১৯ সালেও প্রায় একই ধরনের চোটে পড়েছিলেন সেলেসাও ফরোয়ার্ড। নেইমারবিহীন পিএসজিও বিদায় নিয়েছিল সেই শেষ ১৬ থেকে। তাদেরকে পরাস্ত করেছিল ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
আর গত মৌসুমের অধিকাংশ সময়ে নেইমার ছিলেন মাঠে। পিএসজিও প্রথমবারের মতো উঠেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। তবে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদেরকে।