মিরপুরে ২ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বৃথা গেল মেহেদি হাসান মিরাজের ৫৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রানের লড়াকু ইনিংস। ইনিংসের ১০ টি উইকেট গেছে স্পিনারদের পকেটে, ম্যাচে ৯ উইকেট পেয়েছেন রাকিম কর্নওয়েল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের ব্যাটেই ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ দল, এক পাশে সৌম্য সরকার ধীরস্থির ভাবে ব্যাট চালালেও টেস্ট ক্রিকেটের বিবেচনায় বিধ্বংসীই ছিলেন তামিম ইকবাল। দুজনের ওপেনিং জুটিতে ৫৯ রান আসে, ১৩ রান করে ফিরে যান সৌম্য।
সৌম্যের বিদায়ের পর দ্রুতই টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮ তম ফিফটি পেয়ে যান তামিম ইকবাল, যদিও ফিফটিকে আর টেনে নিতে পারেননি দেশসেরা এই ওপেনার। দলীয় ৭০ রানে ৪৬ বলে ৯ চারে ৫০ রান করেন তামিম, ব্যাট হাতে আরও একবার ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে, ৩ উইকেটে ৭৮ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ দল। বিরতি থেকে ফিরে আর কোন উইকেট না হারিয়েই ১০০ রান পূর্ণ করে টাইগাররা। শেষ ৭ উইকেট হাতে রেখে ১৩১ রানের লক্ষ্যটা তখন সহজই মনে হচ্ছিলো, কিন্তু ১৪ রান করা মুশফিকুর রহিমের আউটে বদলে যায় দৃশ্যপট।
১০১ রানে মুশফিকের বিদায়ের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই ফিরে যান মোহাম্মদ মিথুনও, তার ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। অধগিনায়ক মুমিনুল হক ও লিটন দাসের গড়ে ওঠা জুটিতে যখন আবারও জয়ের সম্ভাবনা জেগে উঠছিল, তখনই ফিরে যান ২৬ রান করা মুমিনুল।
২২ রান করে লিটন ফিরে গেলে দৃশ্যত শেষই হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা, তাইজুল ইসলামেরও ব্যাটসম্যান কিংবা ত্রানকর্তা হয়ে ওঠা হয়নি। একাই লড়াই করে গেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, শুরুতে নাঈম হাসানকে নিয়ে ২৫ রান যোগ করেন। বোকামি করে ফিরে যান নাঈম, ১৮৮ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ফলাফলের আশায় নির্ধারিত সময়ের পরেও খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আম্পায়াররা, আবু জায়েদ রাহিকে নিয়ে শেষ চেষ্টা করে গেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩ চার ও ২ ছক্কায় তুলে ফেলেন ৩১ রান, কিন্তু তীরে তরীটা ভেড়ানো হয়নি তরুণ এই অলরাউন্ডারের।
জয় থেকে মাত্র ১৭ রান দূরে থাকতে রাকিম কর্নওয়েলের ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন মিরাজ, বাংলাদেশও ১৭ রানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়ে যায়। এই হারে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও পয়েন্টের খাতা খোলা হলো না টাইগারদের, রাকিম কর্নওয়েল ৪, ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও জোমেল ওয়ারিকান ৩ করে উইকেট নেন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০৯ রানের সংগ্রহ গড়ে, জবাবে রাকিম কর্নওয়েলের ঘূর্ণিতে ২৯৬ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৭ রানে অল আউট হওয়া স্বস্ত্বেও প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানের বড় লিড থাকায় ২৩০ রানের পুঁজি পায় ক্যারিবিয়ানরা,
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০৯ এবং ১১৭ (জন ক্যাম্পবেল ১৮, ক্রুমাহ বোনার ৩৮, জশোয়া ডি সিলভা ২০, তাইজুল ইসলাম ৪/৩৬, নাঈম হাসান ৩/৩৪, আবু জায়েদ রাহি ২/৩২, মেহেদি হাসান মিরাজ ১/১৫)।
বাংলাদেশ ২৯৬ এবং ১৯৫/৯ (তামিম ইকবাল ৫০, মেহেদি হাসান মিরাজ ৩১, মুমিনুল হক ২৬, লিটন দাস ২২, রাকিম কর্নওয়েল ৪/১০৫, ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ৩/২৫, জোমেল ওয়ারিকান ৩/৪৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭ রানে জয়ী।