২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর কেটে গেছে দুই দশকেরও বেশি সময়, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এই ফর্মেটে পথচলা শুরু করা বাংলাদেশ এখনো শিক্ষণীয় পর্যায়েই আছে। মাঝে মধ্যে ২/১ টা জয় এলেও তা খুবই নগণ্য, সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও নিজেদের দুর্বলতা আরও একবার উন্মোচিত হয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বাংলাদেশে পা রাখার পর থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে তাদের স্কোয়াডের শক্তিমত্তা নিয়ে, কেউ কেউ তো মজা করতেও ভুল করেননি। ওয়ানডে সিরিজে সেই দলটা উড়ে যাওয়ার পর টেস্টেও সেই ধারাবাহিকতা দেখাবে বাংলাদেশ এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার, কিন্তু হয়েছে তার উল্টোটা।
প্রথম টেস্টে ৪ দিন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেও হার, পরেরটাতে তো বাংলাদেশ শুরু থেকেই ব্যাকফুটে। ফলাফল দুই ম্যাচেই হেরে নামের পাশে আরও একটা হোয়াইটওয়াশ যুক্ত করেছে টাইগাররা, যদিও এমন অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পর শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনার, যে তালিকায় আছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারটাই বাস্তব চিত্র, হারের পর প্রকারান্তরে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই দাবী করেছেন বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। তিনি মনে করেন, ২০ বছরেও সেভাবে উন্নতি হয়নি বাংলাদেশের, তবে উন্নতির সুযোগ অবশ্য দেখছেন মুমিনুল।
২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এই ফর্মেটে গতকাল পর্যন্ত ১২১ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, যেখানে জয় আছে মাত্র ১৪ ম্যাচে। যার অর্ধেকই নিজেদের হারিয়ে খোঁজা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, উল্লেখ করার মতো জয় আছে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
১৪ জয়ের বিপরীতে হার ৯১ ম্যাচে, যা আধুনিক ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য একটা পরিসংখ্যানই বটে। লজ্জাটা আরেকটু বৃদ্ধি পাবে যদি ৯১ জয়ের ৪৩ টিতে ইনিংস পরাজয়ের বিষয়টি যুক্ত করে নেওয়া যায়, সব মিলিয়ে মুমিনুল হকের দাবীকে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশ একমাত্র দল যারা এখনও পয়েন্টের খাতাই খুলতে পারেনি, ৫ ম্যাচ খেলে হেরে গেছে প্রতিটি ম্যাচেই। তার সাথে এই সময়ে যুক্ত হয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট হারের লজ্জা, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চালুর পর জয় বলতে সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
গতকাল ম্যাচ শেষে যেন এসব বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তিনি বলেন, “এটা সত্যি কথা, আসলে ২০ বছর হয়ে গেছে। এখনও ওইভাবে কোন উন্নতি হয়নি, আর উন্নতির তো শেষ নেই। যতদিন ক্রিকেট খেলব ততদিনই উন্নতির ব্যাপার আছে, আমাদের তো অনেক উন্নতির বাকি আছে।”
প্রতিপক্ষ বদলায়, বদলে যায় অধিনায়ক, তবে প্রেক্ষাপট আর বলদায় না বাংলাদেশের। উন্নতি দরকার কথাটা সব সময়ই শুনতে পাওয়া যায়, কিন্তু সেই উন্নতিটা আর চোখে পড়ে না।