ড্যানিয়েল ভেট্টরির সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তি ছিল দিন প্রতি আড়াই হাজার ডলার। যা কিনা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ লাখ টাকা। বিশ্বের আর কোনও ক্রিকেট কোচ দিন প্রতি এতো টাকা বেতন পেয়েছেন কিনা রেকর্ড বুক খুঁজে পেলাম হদিস পেলাম না। ভেট্টোরির দাম যাই হোক, ১০০ দিনের দায়ীত্ব নিয়ে বাংলাদেশের স্পিনাররা কতখানি উন্নতি করলো সেটিই বড় প্রশ্ন।
ভেট্টোরি ছাড়াও অনেক লো প্রফাইল কোচও বাংলাদেশে মোটা অংকের বেতন পাচ্ছেন। এমনকি তাদের বসিয়ে দেয়া হয়েছে বড় চেয়ারে। এই যেমন জাতীয় দলের হেড কোচের কথাই ধরুন, দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডোমিঙ্গোকে আনা হয়েছিল এইচপির জন্য। কিন্তু সে এখন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ।
বাংলাদেশের স্থানীয় অনেক কোচই আছেন, যারা প্রশিক্ষক হিসেবে বেশ ভালো হলেও বেতন পান না তেমন। সাকিব আল হাসানকে আজকের সাকিব বানানো কোচ সালাউদ্দিনের ব্যাপারটি উদাহরণ হিসেবে আনলেই ব্যাপারটি পরিষ্কার। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফিও মনে করেন যোগ্যতা অনুসারে দাম পাচ্ছেন না আমাদের দেশি কোচরা।
টিবিএসকে মাশরাফি বলেন, “যে-ই বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসে, তাকে আমরা এমন গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে দেই, তার পা আর মাটিতে থাকে না। দেশি কোচের ক্ষেত্রে তা করি না। সুজন ভাই যখন কোচ হয়ে শ্রীলঙ্কায় গেলেন, তার সঙ্গে এখন পার্থক্য কোথায় হচ্ছে? সে তিন ম্যাচ হেরেছিলেন, এখানেও তো হারছেই। পার্থক্য কোথায়? এই কোচ কী করেছেন?
আমি শুনি যে (রাসেল ডমিঙ্গগো) কোচ নাকি বলছেন, ‘আমাকে স্যাক (বরখাস্ত) করুক, সমস্যা নেই।’ কারণ, সে তো জানেই, বরখাস্ত করলে পুরো এক বছরের টাকা নিয়ে চলে যাবে। চুক্তি তো ওরকমই। সে আবার সমানে ছুটি কাটাতে পারবে। ফ্ল্যাট সাজানো-গোছানো, সব সুযোগ-সুবিধা আছে। আমাদের দেশি কোচ না খেয়ে মরে যাচ্ছে। অথচ সারাটা বছর একজন কৃষকের মতো তারা মাঠে খাটেন। বাবুল ভাই, সালাউদ্দিন ভাই, সুজন ভাই, সোহেল ভাই, মুর্তূজা ভাই, রাজিন সালেহ, আফতাবরা আসছে এখন, কারও দামই নাই।”
কোচ হিসেবে রাসেল ডোমিঙ্গোকে বিচার করতে গিয়ে মাশরাফি আরও বলেন, “সে তো দক্ষিণ আফ্রিকাতেও বরখাস্ত হয়েছিল, তাই না? বাদ দিয়েছিল। ঝামেলার জিনিসকেই আমরা ঢুকিয়ে রেখেছি। আপনি সৌম্যকে পরিকল্পনা করাচ্ছেন সাতে খেলাবেন। রিয়াদকে ছয়ে খেলিয়ে তাকে ম্যানেজ করতে পারছেন না। শান্তকে তিনে খেলানোর জন্য সাকিবকে চারে নামিয়ে দিচ্ছেন। সৌম্যকে খেলানোর জন্য সাতে খেলাচ্ছেন। এটা তো কোনও পরিকল্পনা হলো না!
শান্তকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, ভালো কথা। তরুণ ক্রিকেটারের পাশে থাকতেই পারেন। তাহলে সৌম্যকে বাদ দিন। জোর করে অন্য জায়গায় তো খেলানো জরুরি নয়! শান্ত পারফর্ম না করলে আবার সৌম্যকে নিয়ে আসেন! এরপর, ম্যান ম্যানেজমেন্টও আপনি ঠিকমতো করতে পারেন না।
প্রশ্ন হচ্ছে ফলাফল নিয়ে। বাংলাদেশ সেমি-ফাইনাল খেলতো, মাশরাফিকে নিয়ে কোন কথা হতো না। কোচ হিসেবে আফগানিস্তানের কাছে টেস্টে হেরেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুটি টেস্টে হেরেছে সি গ্রেডের টিমের সঙ্গে। তাকে নিয়ে আদর করবে নাকি?”