স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২৭৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে দ্বিতীয় উইকেটে ইমাম-উল হককে নিয়ে বাবর আজমের ১৭৭ রানের অনবদ্য জুটিতে সহজ জয়ের দিকেই এগুচ্ছিলো পাকিস্তান। কিন্তু সে ম্যাচেই চরম নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের শেষ বলে ১ রান নিয়ে ৩ উইকেটের জয়ে ওয়ানডে সিরিজে শুভসূচনা করছে বাবর আজমরা।
সেঞ্চুরিয়নে রাসি ভ্যান ডার ডাসেনের অভিষেক সেঞ্চুরি আর ডেভিড মিলারের ফিফটির উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে বাবর আজমের সেঞ্চুরি এবং ইমাম-উল-হোকের ফিফটিতে ম্যাচের শেষ বলে ৩ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান।
সুপার স্পোর্ট স্টেডিয়ামে শুক্রবার টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিলো স্বাগতিকরা। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে রাসি ভ্যান ডার ডাসেন এবং ডেভিড মিলারের ১১৬ রানের দূর্দান্ত পার্টনারশিপে সেই ধাক্কা সামলে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ১৭১ রানে হারিস রউফের শিকার হয়ে ৫০(৫৬) রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ডেভিড মিলার।
তবে দূর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা ডাসেন, আন্দিলে ফেলুকায়োকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন। অনবদ্য এক ইনিংস খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৮তম ইনিংসে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে রাসি ভ্যান ডার ডাসেন। শেষ পর্যন্ত উইকেটে টিকে থেকে ১৩৪ বলে ১২৩* রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি, যেখানে ১০টি চারের পাশাপাশি ২টি ছয় মেরেছেন তিনি।

২৭৮ রানের টার্গেট খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানেরও। দলীয় ৯ রানে ফাখার জামানের উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। প্রথম ৮ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ১৯ রান সংগ্রহ করেছিল তারা। তবে এরপরেই খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসে রানের চাকা সচল করেন বাবর-ইমাম জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে ১৭৭ রানের অনবদ্য জুটি গড়েন এ দুজন।
আনরিখ নরকিয়ার বলে চার মেরে ১০৩ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাবর আজম। এর ফলে হাশিম আমলা, বিরাট কোহলি, কুইন্টন ডি কক, ডেভিড ওয়ার্নারদের ছাপিয়ে ইনিংসের হিসেবে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৩ সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়ছেন বাবর আজম। তবে সেঞ্চুরির ঠিক পরের বলেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ আউট হন তিনি। তার এই দূর্দান্ত ইনিংসে ৬৮ রানই এসে বাউন্ডারি থেকে, যেখানে ১৭টি চারই মেরেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

একটু পরেই নরকিয়ার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন ইমাম-উল-হকও। ৩ চার আর ১ ছয়ে ৮০ বলে ৭০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর দ্রুত আর আরও ২ উইকেট তুলে নিয়ে দূর্দান্তভাবে খেলায় ফিরে স্বাগতিকরা। ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং শাদাব খান গুরুত্বপূর্ণ ৫৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। কিন্তু ৪০ রান করে ফেলুকায়োর শিকার হন রিজওয়ান।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩ রান। আন্দিলে ফেলুকায়োর করা সেই ওভারে প্রথম বলেই শাদাব খান ফিরে গেলে ম্যাচের রোমাঞ্চ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তারপর টানা তিন ডট বল দেন ডানহাতি পেসার। তবে পঞ্চম বলে ২ এবং শেষ বলে ১ রান নিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন ফাহিম আশরাফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ২৭৩/৬ (৫০ ওভার); ডাসেন ১২৩*, মিলার ৫০ ; শাহিন ২/৬১
পাকিস্তানঃ ২৭৪/৭ (৫০ ওভার); বাবর ১২৩, ইমাম ৭০; নরকিয়া ৪/৫১