ক্রিকেট > বাংলাদেশের ক্রিকেট
লিটন-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ
সকাল সবসময় যে সঠিত বার্তা দেয় না সেটি আজ প্রমাণ করলেন লিটন ও মুশফিক। ২৪ রান থেকে ২৭৭ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য জুটি।

![ddf79281-8c8e-4908-a375-a284e991a8ad.jpg [ ddf79281-8c8e-4908-a375-a284e991a8ad.jpg ]](https://img.dailysportsbd.com/storage/2022/05/23/9380fecb1261a43ab4f52ed11f6f23fd6f49be52.jpg)
মিরপুরে সকালটা বাংলাদেশের জন্য ভালো ছিল না। জয়কে বোল্ড করে প্রথম ওভারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা লংকান বোলাররা পরের ওভারেই তুলে নেন অন ফর্মে থাকা তামিম ইকবালের উইকেট। কিছু বুঝে উঠার আগেই বাংলাদেশের দুই ওপেনারের উইকেট হারানোর পর কাপ্তান মুমিনুল হক আসলেন, কিছুটা কাউন্টার আক্রমণের চেষ্টা করলেও ফিরে যান মাত্র দুইটি চার মেরেই।
৯ রানে কাপ্তানের ফেরার পর ৮ রান করে বলের লাইন মিস করে আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিবও প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ এর শিকার হন। ২৪ রানের মধ্যে নেই ৫ উইকেট। লিটন যখন ব্যাট করতে এলেন তখন স্লিপে জনকেও রাখে শ্রীলংকা। এরপর তুলনামূলক পজিটিভ ক্রিকেট খেলে শ্রীলংকার বোলারদের জবাব দিতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। লিটন দাসকে সাথে নিয়ে ইঙ্গিত দিতে থাকেন জুটি গড়ার।
লিটন দাস অনান্য সব দিনের মত শুরুতে আজও নড়বড়ে ছিলেন, বেশ কয়েকবার আউট হওয়ারও সম্ভাবনা জেগেছিল। মুশফিকেই যেন আবারও সব আশা টিম বাংলাদেশের। সময় যত গড়িয়েছে ততই লিটনের ব্যাটে টাইমিং ঠিক হয়েছে একটা সময় লিটনকেও অত্যন্ত থিতু মনে হচ্ছিলো উইকেটে। বোলিং পরিবর্তন করা শুরু করেন শ্রীলংকান কাপ্তান। ঘন ঘন বোলার পরিবর্তন করাতে করুনারত্নেকে বেশ চিন্তিতই মনে হচ্ছিলো। কেননা লিটন এরপর যেভাবে প্রতি ওভারে বাউন্ডারি আর সিঙ্গেল আদায় করে নিয়েছেন তাতে রান রেট বেড়ে যাচ্ছিলো হু হু করে। মিরপুরের মাঠে ৩০০ এর মত রানও যে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে সেটিও তো ভাল করেই জানে শ্রীলংকা। ২৩ ওভারেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল। ৬৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তখনও বিপদে বাংলাদেশ।
এরপর গল্পটা এই দুইজনেরই। দারুণ খেলে জুটি গড়েন ১০০ রানের। এরপর যেন আরও মারমুখী হয়ে উঠলেন দুইজনেই। লংকানদের প্রতি ওভারেই একের পর এক শট বলের জবাবটা আসছিল বাউন্ডারির মাধ্যমে। প্রথম ২৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬৬ রান। লাঞ্চের পরের সেশনে খেলা হয় মোট ৩০ ওভার। এই ৩০ ওভারে বাংলাদেশ যোগ করে ৮৭ রান। কোন উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ বোর্ডে তখন ১৫৩ রানে ৫ উইকেট। শেষ সেশনে বাংলাদেশ কি দিনটা নিজেদের করে নিবে কিনা সেটিই ছিল দেখার বিষয়। চা পাানের বিরতির পর বাংলাদেশ আরো নির্ভার ব্যাটিং করতে থাকে।
একটা সময় শ্রীলংকা আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং এর বদলে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডার পাঠিয়ে বেশি বেশি বাউন্সার দিতে থাকে কিন্তু তা কোন কাজে আসছিল না। মুশফিক এবং লিটন যেন চট্টগ্রাম এর হাইলাইটস নতুন করে দেখাচ্ছিলেন মিরপুরে। মাঝে একবার লিটনের একটা ক্যাচ উঠলেও সেটি মিস করেন ফিল্ডার। এরপর আর কোন হাফ চান্সও তৈরী হচ্ছিলো না। ১৪৯ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। এরপর মুশফিকও করলেন একশো, টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকালেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। গল্পটা সেখানেও শেষ হতে পারতো কিন্তু সেটির মুগ্ধতা থেকে গেছে বেলার শেষ পর্যন্ত।
২৭৭ রানে সেই পাঁচ উইকেট হাতে নিয়েই মাঠ ছাড়ে মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। মুশফিক অপরাজিত আছেন ১১৫ রানে, লিটন কুমার দাস অপরাজিত আছেন ১৩৫ রানে। বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই এ-ই জুটিকে আরো একশো রানের মত দেখতে চাইবে যদি অবিশ্বাস্য রকমের সেই চাওয়া পুর্ণ হয় তবে বাংলাদেশও বড় রান দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারে প্রথম ইনিংসেই। মিরপুরের উইকেটে ৩৫০ এর বেশি স্কোর বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে পারে সুবিধাজনক পরিস্থিতিতেই।